যারা একটু কম দেখাশোনা করেই সারা বছর ফুল পেতে চায় তাদের জন্য আদর্শ হল এই এ্যডেনিয়াম ফুলের গাছ।
এ্যডেনিয়াম একটি খুব সুন্দর ও দীর্ঘজীবী ফুলের গাছ। বিশেষ করে যারা ছাদে ফুলের বাগান বানাতে পছন্দ করেন তাদের কাছে তো এ্যডেনিয়াম খুবই প্রিয়। এর অনেক প্রজাতি বিভিন্ন রং এ পাওয়া যায়.. সিঙ্গেল, ডাবল, বাইকালার, ইত্যাদি।এ্যডেনিয়াম এর আসল নাম হল এ্যডেনডাম (addendum) একে আরেক নাম ডাকা হয়, সেটা হল ডেসার্ট রোস ( Desert rose) এই গাছের আসল উৎপত্তি কিন্তু আফ্রিকা উপমহাদেশে বিশেষ করে নাম্বিয়া, সোমালিয়া, জাম্বিয়া, বৎসোয়ানা, প্রভৃতি অঞ্চলে। এছাড়া সেনেগাল থেকে সুদান ও থাইল্যান্ড এবং আরব দেশেও এর কিছু প্রজাতি পাওয়া যায়।
এই গাছ বিদেশী হলে কি হবে এখন যে কোনো নার্সারী তে খুব সহজেই পাওয়া যায়।
এই এ্যডেনিয়ামের খুব সুন্দর বনসাই ও তৈরী করা যায়। দারুন লাগে দেখতে।
জাতি: Wrightieae
মহাজাতি: Adenium
প্রজাতি: Adenium obesum
এর প্রায় ৫ থেকে ১২ রকমের প্রজাতি পাওয়া যায় । নিচে কয়েকটির নাম দেওয়া হল
➽ Adenium arabicum
➽ Adenium boehmianum
➽ Adenium multiflorum
➽ Adenium obesum
➽ Adenium oleifolium
➽ Adenium swazicum
আজ আপনাদের এ্যডেনিয়াম গাছ লাগানো সম্পর্কে gogreenkol নার্সারী জানা কিছু তথ্য শেয়ার করছি
যেমনটা এর নাম ডেসার্ট রোস, যার মানে মরুভূমির গোলাপ। এখন বুঝতেই পারছেন মরুভূমির পরিবেশ অনুযায়ীই এর মাটি ও জলের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে আসুন জেনে নিই।
- এডেনিয়াম মাটি প্রস্তুত -
মোটা বালি ২৫%
ইটের গুড়া ২৫%
জৈব সার ২০%
মাটি ২০%
হারের গুড়া, কয়লা,পাতা পচা সার -১০%
যদি সব উপাদান না থাকে, সেক্ষেত্রে শুধু মোটা বালি, ইটের গুড়া ও মাটি মিশিয়ে পটিং করলেও চলে।
- পরিচর্যা ➢
এই গাছকে সম্পূর্ণ রোদে রাখবেন,, তবেই এর থেকে ভালো ফুল পাওয়া যায় ।
এই গাছে বিশেষ কোনো রোগ হয়না তাই ঔষুধ দেবার ঝামেলা নেই । শুধু বর্ষাকালে একটু খেয়াল রাখলেই অনেক বছর একে বাঁচিয়ে রাখা যায়। খুব বেশি বৃষ্টির সময় টব টিকে গাছসুদ্ধু কাত করেও রেখে দিতে পারেন। আর অন্যান্য গাছের সাথে একেও মাঝে মাঝে খোল পচানো জল দিয়ে দেবেন ।
শীতকালে এই গাছের পাতা বেশির ভাগই ঝরে যায় ঠান্ডা কুয়াশা লাগার ফলে । তবে সেটা গাছের কোনো ক্ষতি করে না ঠান্ডা কমে গেলে আবার নতুন পাতা গজিয়ে ওঠে । তবে এটা থেকে বাঁচার জন্য গাছটিকে কোনো শেড বা পলি হাউসের ভিতর রাখতে পারেন । আমরা জানি অ্যাডেনিয়াম কে মরুগোলাপ বলা হয়। অর্থাৎ অধিক পরিমাণে রোদ অ্যাডেনিয়াম খুব পছন্দ করে। অপরদিকে অ্যাডেনিয়াম বৃষ্টিতে ভিজলে গোড়ায় জল জমে থাকলে কডেক্স(গোড়া বা মূল) পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এজন্য খেয়াল রাখতে হবে গোড়ায় যেন জল জমে না থাকে।
- ছাঁটাই ➣
বর্ষাকাল আর শীতকাল ছাড়া যে কোনো সময় এর ছাঁটাই করা চলে। ছাঁটাই করার পর সেই জায়গায় যেকোনো ছত্রাকনাশক পাউডার ( যেমন Saaf , Bavistin ইত্যাদি ) লাগিয়ে দেবেন ।
- রিপটিং প্রসঙ্গ➣
অনেক নতুন বাগানী এডেনিয়াম গাছ কিনে পটিং করার পরে সব পাতা ঝরে যাওয়া দেখে ভয় পেয়ে যান।এটা খুব সাভাবিক যে, এডেনিয়াম নতুনভাবে পটিং করলে পাতা ঝড়ে যেতে পারে।
- চারা গাছের ফুল প্রসঙ্গে ➣
অনেকেই জানি না যে, এডেনিয়াম বীজের চারাগাছ থেকে ফোটা ফুলটি হুবহু মাতৃগাছের বৈশিষ্ট্য বহন করে না।সাধারণত ৯০% চারা থেকে সিংগেল পেটাল ফুল হয় আর ফুল লাল ও লাল-সাদা মিক্সড, গোলাপি-সাদা মিক্সড কালার হয়ে থাকে। তবে সফল পলিনেশনের ফলে বীজ থেকে ডাবল পেটাল এডেনিয়াম হয়ে থাকে। এডেনিয়াম সারাবছর পর্যায়ক্রমে ফুল দিতে থাকে, আবহাওয়ার কারণে আমাদের দেশে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত গাছের পাতা ঝরে যায় এসময়ে ফুলের সংখ্যাও কমে যায়, অল্প কিছু গাছে পাতা না থাকলেও ফুল ফোটে।
- ডাবল ও মাল্টি পেটাল ফুল ➣
বীজের গাছের সাথে ডাবল ও মাল্টি পেটাল ও বিভিন্ন কালারের ডালের গ্রাফটিং (মানে জোড়া দেওয়া হয়)। এর মাধ্যমে সিংগেল পেটালকে ডাবল ও মাল্টি পেটাল করা হয়ে থাকে।